এই সময়: কপালে ফেট্টি, হাতে ত্রিশূল, ঢাল-তলোয়ার অথবা বল্লম। একেবারে রণংদেহি মূর্তিতে পাড়া টহল দিলেন মহিলারা। মঙ্গলবার পাথুরিয়াঘাটা ৫-এর পল্লিতে এমন দৃশ্য দেখে থমকে গেলেন পথচারীরা। এই পাড়ায় দুর্গাপুজো হচ্ছে ৮৪ বছর আগে থেকে। এ বছর পুজো পড়ল ৮৫ বছরে। একেবারে সাবেক আমলের এক চালচিত্রের প্রতিমা থেকে শুরু করে হাল আমলের থিমের পুজো— কত পরিবর্তনই না দেখলেন উত্তর কলকাতার এই এলাকার বাসিন্দারা। কিন্তু পুজোর মুখে মহিলাদের এমন অস্ত্র-হাতে পাড়া পরিক্রমা!আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ভয়াবহ ঘটনার পর গোটা রাজ্যই মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষ চিন্তিত। ব্যতিক্রম নয় পাথুরিয়াঘাটা পাঁচের পল্লিও। মণ্ডপে প্রতিমা দর্শনে আসা মহিলারা যাতে কোনও রকম অস্বস্তিতে না পড়েন, তার জন্যই তৈরি হয়েছে ‘অপরাজিতা মহিলা বাহিনী’। মঙ্গলবার পাড়ায় টহল দিলেন সেই বাহিনীরই সদস্যরা। নেতৃত্বে স্থানীয় ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ইলোরা সাহা।

এই পাড়ার এ বছরের পুজোর থিম ‘ব্রত পার্বণ’। যুগ যুগ ধরে গ্রামবাংলার মহিলা নানা ধরনের ব্রতপাঠের মাধ্যমে বাংলার বহু পুরোনো সংস্কৃতি ধরে রেখেছেন। সেই ঐতিহ্যই এ বার মণ্ডপে দেখা যাবে। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্প ইতিহাসের গবেষক উপাসনা চট্টোপাধ্যায়ের উপরে ভার পড়েছে মণ্ডপ পরিকল্পনার। মণ্ডপ দর্শকদের মন কাড়বে, আর মণ্ডপ দেখতে আসা মহিলাদের নিরাপত্তার ভার থাকছে ‘অপরাজিতা মহিলা বাহিনী’-র উপরে।

ইলোরা বলছেন, ‘নিরাপত্তার জন্য মহিলা পুলিশকর্মী, বেসরকারি মহিলা নিরাপত্তারক্ষীরা থাকবেন। এর পাশাপাশি আমরা অর্থাৎ অপরাজিতা মহিলা বাহিনীও থাকছি।’ কাউন্সিলার জানাচ্ছেন, বাহিনীর একটা ক্যাম্পে সারা দিনই পালা করে ‘ডিউটি’ করবেন মহিলারা। কোনও মহিলা দর্শক অসুস্থ হলে তাঁকে সাহায্য করবেন বাহিনীর সদস্যরা। অন্য দিকে কোনও মহিলা যে কোনও কারণে অস্বস্তিতে পড়লে তাঁকেও সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে বাহিনী।

আর বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, ‘মহিলারা কোনও বিষয়েই যখন পিছিয়ে নেই, তখন নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যাপারেই বা কেন পিছিয়ে থাকবেন? পিছিয়ে যে নেই, সেই বার্তা দিতেই মঙ্গলবার এমন অস্ত্র-হাতে পরিক্রমা।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version