রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে আফ্রিকা সফরে গিয়েছেন বঙ্গ-বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। হিমাচল প্রদেশের আপেলের গুণগতমান সম্পর্কে ভিডিয়ো করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করছেন দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি আপাতত উত্তর ভারত সফরে ব্যস্ত। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজনীতি করেন নিজের স্টাইলে। বিজেপির সাংগঠনিক বিষয়ে তিনি সচরাচর নাক গলান না। মঙ্গলবার বাংলার ছয় বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনের প্রস্তুতি বৈঠকেও শুভেন্দু হাজির ছিলেন না।এ দিকে, হাতে সময় আর একমাসেরও কম। আগামী ১৩ নভেম্বর ছ’টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন। সুনীল বনসল, মঙ্গল পাণ্ডেরা উপ-নির্বাচনের রণকৌশল ঠিক করলেও বঙ্গ-বিজেপির শীর্ষ নেতারা কবে ভোটের ময়দানে ঝাঁপাবেন, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে গেরুয়া শিবিরে। সূত্রের খবর, সোমবার উপ-নির্বাচনের প্রস্তুতি বৈঠকে দলের রাজ্য নেতাদের বনসলরা ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, ছয়ের মধ্যে দুই পেলেই তাঁরা খুশি!
রাজ্য বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘শুধু সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ-ই নয়, রাজ্য বিজেপির অনেকেই ছুটির মুডে আছেন। তাঁরা আগে গা-ঝাড়া দিয়ে মাঠে নামুন, তারপর ওই বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু হবে। হয়তো দলের নেতাদের গা-ছাড়া মনোভাব দেখেই বনসলরা উপ-নির্বাচনে ভালো ফলের আশা করছেন না।’
সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে দিন কয়েকের মধ্যেই উপ-নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিতে পারে রাজ্যর শাসকদল তৃণমূল। তালড্যাংরা, হাড়োয়া, মেদিনীপুরে ইতিমধ্যেই প্রার্থীর নাম উহ্য রেখে দেওয়াল লেখা শুরু করে দিয়েছে তারা। কলকাতায় বসে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা প্রস্তুতি বৈঠক সারলেও এখনও সংশ্লিষ্ট বিধানসভা এলাকাগুলির পদ্ম নেতাদের কাছে সুস্পষ্ট কোনও বার্তা এসে পৌঁছয়নি বলেই বিজেপি সূত্রে খবর।
মেদিনীপুরে বিজেপির এক জেলা কমিটির সদস্যের আক্ষেপ, ‘সাধারণ মানুষ আমাদের ভোট দিতে চায়। কিন্তু আমাদের রাজ্য নেতাদেরই মনে হচ্ছে জেতার বিশেষ তাগিদ নেই। এখনও আমাদের কাছে কোনও ইঙ্গিত নেই মেদিনীপুরে পার্টি কাকে টিকিট দেবে। শুনেছি, কলকাতায় বৈঠক করে ঠিক করা হয়েছে, আমাদের এখানে জোরদার প্রচার হবে। কিন্তু কবে, সেটাই তো বোঝা যাচ্ছে না।’
সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৪ অক্টোবর কলকাতায় আসতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সদস্যপদ সংগ্রহ অভিযান নিয়ে বাংলার বিজেপি নেতৃত্বর সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে তাঁর। তার আগেই অবশ্য কলকাতায় ফিরে আসার কথা সুকান্ত-দিলীপের। এক বর্ষীয়ান বিজেপি নেতার টিপ্পনি, ‘এখন সবাই ব্যস্ত অমিত শাহের সফরের প্রস্তুতি নিয়ে। উপ-নির্বাচনের প্রস্তুতি গৌণ হয়ে গিয়েছে। শাহ চলে যাওয়ার পর অন্তত এক সপ্তাহ চলবে তিনি কী কী বার্তা দিয়ে গেলেন, তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ। এ সবের ফাঁকে ফুরসত মিললে উপ-নির্বাচন নিয়ে চর্চা হলেও হতে পারে!’