চম্পক দত্ত: ভয়ংকর! গ্রামেই লোকালয়ের মধ্যে দেখা মিলল পাইথনের (Python)। রবিবার রাতে। বিশালাকার সাপটিকে এলাকায় ঘুরে বেড়াতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকাবাসী। খবর দেওয়া হয় বন দফতরে। এর কদিন আগেই আর এক জেলায় গাছের উপর কিং কোবরার (King Cobra) দেখা মিলেছিল।
লোকালয়ে পাইথন
মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের ঢোড়াবিলা গ্রামে লোকালয়ের মধ্যে পাইথনের দেখা মেলে। রবিবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিশালাকার সাপটিকে এলাকায় ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। আর তাতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার মানুষজন। খবর দেওয়া হয় বন দফতরে এবং চন্দ্রকোনা থানায়।
খাবারের খোঁজে
বন দফতরের রেসকিউ টিমের সদস্যরা সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় পৌঁছন এবং তাঁরা সাপটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যান। ওই গ্রামের পাশেই রয়েছে ধামকুড়িয়ার জঙ্গল। সম্ভবত সেই জঙ্গল থেকেই খাবারের খোঁজে গ্রামে চলে আসে বিশালাকার পাইথনটি। গ্রামে বিশালাকার পাইথনের দেখা মেলায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পাইথনটিকে উদ্ধারের পরে পাইথন নিয়ে গ্রামবাসীদের বিস্তারিত ব্যাখ্যা শুনিয়ে সেই সাপটির বিষয়ে তাঁদের সচেতন করেন বন দফতরের রেসকিউ টিমের সদস্যরা।
প্রসঙ্গত কিং কোবরা
কিছুদিন আগে মালবাজার মহকুমার নাগরাকাটা ব্লকের ভুটান সীমান্ত-লাগোয়া চ্যাংমারি চা-বাগানের আপার ডিভিশনের নেপালি লাইনে বিশাল এক কিং কোবরা দেখা গিয়েছিল। চাঞ্চল্য ছড়ায়। চা-বাগানের শ্রমিকেরা প্রথমে আমগাছের মগডালে বিশাল সাপটিকে পেঁচিয়ে থাকতে দেখে আতঙ্কে চিৎকার শুরু করে দেন। তাঁরা তৎক্ষণাৎ খবর দেন বন দফতরের ডায়না রেঞ্জে। চা-বাগান থেকে খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছন বন দফতরের কর্মীরা। কিন্তু আমগাছের প্রায় ২০ ফুট উপরে থাকা সাপটিকে উদ্ধার করতে নেমে তাঁরাও প্রথমটা থমকে যান। পরে বন দফতরের তরফে সাহায্যের জন্য যোগাযোগ করা হয় সুলকাপাড়ার দুই অভিজ্ঞ সর্পপ্রেমী– সমাবেশ বিশ্বাস ও ফরিদুল হকের সঙ্গে। এই দুই সাপ উদ্ধারকারী তরুণ এসে পৌঁছলেই শুরু হয় সর্প-উদ্ধার অভিযান।
সর্প-উদ্ধার অভিযান
গাছের উঁচু মগডালে পাকিয়ে থাকা কিং কোবরাটিকে নামাতে সময় লেগে যায় বেশ কিছুক্ষণ। কিন্তু নিপুণ দক্ষতায় এবং প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে অবশেষে তাঁরা উদ্ধার করেন প্রায় ১৩ ফুট লম্বা এই সাপটিকে। উদ্ধার হওয়া সাপটিকে পর্যবেক্ষণ করার পর বন দফতরের কর্মী ও সাপপ্রেমীরা সিদ্ধান্ত নেন, এটিকে পুনরায় জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে। সেইমতোই শুক্রবার রাতেই গভীর জঙ্গলে সাপটিকে ছেড়ে দেওয়াও হয়। উদ্ধারকারী সমাবেশ বিশ্বাস জানান, ‘আমরা যখন পৌঁছই, তখন সাপটা খুব রেগে ছিল। ও ওর মাথা এদিক-ওদিক ঝোঁকাচ্ছিল। গাছের ডালে প্যাঁচানো থাকায় সাপটিকে নামানো একটু ঝুঁকির ছিল। কিন্তু সাবধানে ধৈর্য ধরে শেষমেশ নামিয়ে ফেলি আমরা।’ সঙ্গী ফরিদুল হক বলেন, ‘লোকজন যাতে ক্ষতি না করে এবং সাপটা যাতে আঘাত না পায়, সেসব মাথায় রেখেই কাজ করি আমরা।’ বন দফতরের তরফ থেকেও তাঁদের ধন্যবাদ জানানো হয়। এদিকে বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, বর্ষার মরশুমে পাহাড় ও জঙ্গল থেকে সাপ লোকালয়ে চলে আসে খাদ্যের সন্ধানে বা আশ্রয়ের খোঁজে। তাই সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)